পেপের পুষ্টিগুন



পেঁপেতে রয়েছে প্রচুর প্রোটিওলাইটিক এনজাইম যা প্রোটিন হজমের জন্য সাহায্য করে। তাই বিভিন্ন মাংসের সঙ্গে কাঁচা পেঁপে সালাদ হিসেবে বা রান্না করা পেঁপে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয় এবং মাংসের চর্বির ক্ষতিকর দিকটা কমিয়ে দেয় এছাড়া মাংসে কাঁচা পেঁপে দিলে তা সিদ্ধ হয় দ্রুত।
একদিকে কাঁচা পেঁপে, শশা, গাজর, লেটুস বা ধনিয়া পাতার সালাদ যেমন ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে অন্যদিকে পেঁপে যুদ্ধ করে দেহের বাড়তি মেদের বিরুদ্ধে এবং কাঁচা পেঁপের প্রোটিওলাইটিক এনজাইম ক্যানসার নিরাময়ে  গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর এই উপকারের জন্য কাঁচা পেঁপে রান্নার পরিবর্তে কাঁচা খাওয়াটাই উত্তম।
পাকা পেঁপেতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ ও ‘সি যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ছোঁয়াচে রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে, দাঁত, চুল, ত্বকের জন্য বয়ে আনে সুফল। অ্যান্টি অ্যাজিং ফ্যাক্টর অর্থাৎ বৃদ্ধ বয়সকে দূরে ঠেলে দেয়ার উপাদান রয়েছে পেঁপেতে। তাই ত্বকের ওপরেও কাজ করে এই ফল। এতে কোনো খারাপ কোলস্টেরল ও ফ্যাট নেই। মোটা মানুষেরা দুশ্চিন্তামুক্ত হয়ে খেতে পারেন। তবে ডায়াবেটিক রোগীরা মিষ্টি পেঁপে পরিহার করতে হবে।

বাতাবি লেবুর পুষ্টিগুন



বাতাবি লেবু পুষ্টিগুণে ভরপুর এক ফলের নাম দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় এই ফল প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় এই ফল জাম্বুরা বা ছোলম নামেও পরিচিত লেবু বিভিন্ন জাতের হয়ে থাকে কোনো জাতের ভেতর লাল টকটকে কোনোটির ভেতর আবার সাদা কোনোটির স্বাদ মিষ্টি আবার কোনোটির স্বাদ টক হয় বাংলাদেশে মৌসুমি ফল হিসেবে এর যথেষ্ট সমাদর রয়েছে
বাতাবি লেবুর অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে বাতাবি লেবু ক্যানসার, ডায়াবেটিস হৃদরোগের চিকিৎসা প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর শরীরের দূষিত বিষাক্ত পদার্থ  নিঃসরণে বাতাবি লেবুর ভুমিকা প্রমাণিত বিভিন্ন ধরনের প্রাণঘাতি রোগ প্রতিরোধে বাতাবি লেবুর রস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে বাতাবি লেবুর রস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় যে কোনো ধরনের কাটা ছেঁড়া ক্ষত সারাতে বাতাবি লেবুর জুড়ি নেই যকৃত্, দাঁত মাড়ির সুরক্ষায় বাতাবি লেবু অতুলনীয় তাছাড়া অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় বাতাবি লেবু বয়স ধরে রাখতে সহায়তা করে এবং বুড়িয়ে যাওয়া বিলম্বিত করে
১০০ গ্রাম এর সমপরিমাণ এক কাপ বাতাবি লেবুতে রয়েছে :
মোট ক্যালরি-৩৭ কার্বোহাইড্রেট-. গ্রাম, প্রোটিন-. গ্রাম, চর্বি-২গ্রাম, ফাইবার বা আঁঁশ-. গ্রাম এবং চিনি- গ্রাম
বাতাবি লেবু কেন খাবেন?
এসিডিক হবার কারনে খাদ্য পরিপাকে বাতাবি লেবু অত্যন্ত সহায়ক হজম হওয়ার পর বাতাবি লেবুর রস অ্যালকালাইন রি-অ্যাকশন তৈরি করে হজমে সহায়তা করে বাতাবি লেবুর খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বায়ো-ফ্লাভোনয়েড, যা ক্যানসার কোষ বিস্তার রোধে সহায়তা করে অতিরিক্ত ইস্ট্রোজেন থেকে শরীরকে মুক্ত রাখার কারণে ব্রেস্ট ক্যানসারের চিকিত্সা প্রতিরোধে বাতাবি লেবু ভূমিকা রেখে থাকে অতিরিক্ত ভিটামিন-সি থাকার কারণে ধমনীর ইলাস্টিক অবস্থা দৃঢ়তা রক্ষায় বাতাবি লেবু অত্যন্ত কার্যকরজ্বর, ডায়াবেটিস, নিদ্রাহীনতা, গলার ক্ষত, পাকস্থলী প্যানক্রিয়াস এর ক্যানসার এবং অন্যান্য সংক্রামক রোগ চিকিৎসা প্রতিরোধে এবং শরীরের ক্লান্তি অবসাদ নিরাময়ে বাতাবি লেবুর জুড়ি নেই বাতাবি লেবুতে রয়েছে পেকটিন যা ধমনীর রক্তে দূষিত পদার্থ জমা হতে বাধা দেয় এবং দুষিত পদার্থ বের করতে সহায়তা করে
রক্তে কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমিয়ে হৃৎপিণ্ড সুরক্ষা এবং হৃদরোগজনিত জটিলতা থেকে শরীরকে রক্ষা করে শরীরের ওজন কমাতেও বাতাবি লেবু সহায়তা করে বাতাবি লেবুর ফ্যাট বার্নিং এনজাইম শ্বেতসার সুগার শোষণ করে ওজন কমাতে সহায়তা করে রক্তের লোহিত কণিকাকে টক্সিন অন্যান্য দূষিত পদার্থের হাত থেকে রক্ষা করে বিশুদ্ধ অক্সিজেন পরিবহনে সহায়তা করে

আপেলের পুষ্টিগুন



আপেল একটি অত্যন্ত পরিচিত ফল, যা সব যায়গায় পাওয়া যায়| দিনে এক থেকে দুইটি আপেল খেলে হার্টের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়| গবেষণা থেকে পাওয়া গেছে যেদিনে একটি আপেল খেলে রক্তের ক্ষতিকর LDL Cholesterol কমে|
আপেল শরীর থেকে বিষাক্ত ও ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দেয়ভিটামিন এবং বি১বা থায়ামিনে ভরপুরআরো আছে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম ইত্যাদিআছে টার্টারিক অ্যাসিড, যা শরীরে জীবাণু সংক্রমণ প্রতিরোধ করে, আর এটি যানবাহনে ভ্রমণকালীন বমি প্রতিরোধে সহায়তা করেআপেলে আছে পেকটিনযা পাকস্থলীকে সুস্থ রাখেবলাবাহুল্য, পেয়ারাতেও আছে প্রচুর পেকটিনআপেলের রস যকৃৎ, গলব্লাডার বা পিত্তথলী ও ফুসফুসের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক

কেন আপেলের এত গুনাগুন?

* আপেল প্রথমত: খেতে খুবই সুস্বাদু, সহজে ক্ষুধা নিবারণ করতে এই ফলের জুড়ি নেই| অন্য ফাস্ট/junk ফুড বা মিষ্টি খাবার খাওয়ার চেয়ে, মিষ্টি, কচকচে আপেল খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করা অনেক ভালো | কারণ এতে মাত্র ৭০-১০০ ক্যালরি আছে|
* ডায়রিয়া হলে তা সারাতে সাহায্য করে|
* মাসেল টোন করতে সাহায্য করে ওজন কমায়
* আপেলের খোসায় polyphenols নামক antioxidant আছে, যা কোষকে ধ্বংশ হয়ে দেয় না|
* জ্বর হলে তা কমাতে সাহায্য করে, তাই জ্বর এর রোগীরা আপেল খেলে ভালো বোধ করেন|
* আপেলে phenols আছে, যা LDL Cholesterol কমায় ভালো cholesterol HDL বাড়ায়|
* আপেলের প্রচুর পানি আছে, তাই এটি পানিশুন্যতা দূর করে, তৃষ্ণা মেটায় শরীর ঠান্ডা করে|
* আপেলে পর্যাপ্ত boron আছে, যা হাড়কে শক্ত রাখতে সাহায্য করে ব্রেইনের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে
* আপেলে Quercetin আছে, যা একটি flavonoid, এটি বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার হতে শরীরকে রক্ষা করে| এই পুষ্টি উপাদানটি free radical ধ্বংশ হতে রক্ষা করে| তাছাড়া এটি DNA ধ্বংশ হতেও রক্ষা করে|
* আপেলে আছে flavonoid, যা antioxidant, এটি রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে, হার্টের অসুখ ক্যান্সার হতে রক্ষা করে
* আপেলে প্রচুর Phytonutrients, যেমন: ভিটামিন A, E beta carotene আছে| এগুলো free radical ধ্বংশ হতে, ব্রেইনের অসুখ হতে বাধা দেয়, ফুসফুস ভালো রাখে শ্বাস প্রশ্বাস প্রক্রিয়া ভালো রাখে |
* আপেলে সামান্য ভিটামিন সিও আছে| তাই আপেল রোগ প্রতিরোধেও সাহায্য করে | তাছাড়া ভিটামিন সি তাড়াতাড়ি রোগ সারাতে সাহায্য করে|
* অন্যান্য ফলের মত আপেলের চিনি রক্তের চিনির মাত্রা বাড়িয়ে দেয় না| ফলে diabetes এর রোগীরা নিশ্চিন্তে পরিমানমত আপেল খেতে পারেন |
* আপেল লিভার gall bladder পরিষ্কার রাখে, এর পাথর (gallstones) দূর করে বা ধ্বংশ করে
* আপেলে কোনো লবন নেই, তাই আপেল থেকে অতিরিক্ত লবন খাবার কোনো সম্ভাবনা নেই|
* আপেলের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে তা কফ দুর করে|
* Gastric এর সমস্যা কমায়
* আপেলের রস দাঁতের জন্য ভালো| কারণ ব্যাকটেরিয়া এর কারণে দাঁতের ক্ষয় হয়, আপেলের রস ৮০% পর্যন্ত দাঁতের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংশ করতে পারে| তাই বলা যায় যে –"an apple a day also keeps the dentist away”!
****************************************************************